মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার :: কক্সবাজার সদর হাসপাতালের রেডিওলজী এন্ড ইমেজিং বিভাগে ছিল মাত্র ১ জন চিকিৎসক। তাকেও ডেপুটেশনে বদলী করা হয়েছে চট্টগ্রামে। ফলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগে চরম সংকটে পড়েছে। আর ডেপুটেশনে চট্টগ্রামে চাকরী করা সেই চিকিৎসক বেতন ভাতা নেবে কক্সবাজার থেকে। ফলে বিধি অনুযায়ী পোস্ট না থাকায় কক্সবাজারে আর কোন ডাক্তারও নিয়োগ দেওয়া যাবেনা। বর্তমানে কোন প্রকার জোড়াতালি দিয়ে চলা এই বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে আসা দুই শতাধিক রোগীকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর এক মাত্র ডাক্তারকে বদলী এবং তাকে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে জেলার সচেতন মহল।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের রেডিওলজী ও ইমেজিং বিভাগে ডাক্তারের পদ আছে ২টি। এর মধ্যে একজন জুনিয়র কনসালটেন্টও আরেকজন রেডিওলজিস্ট। প্রায় সময় এই পদখালী থাকলে প্রায় ৩ বছর আগে জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসাবে যোগদান করেন ডাঃ মীনাক্ষী রায়। তার সাথে এই বিভাগের সার্বিক দায়িত্ব পালন করে আসছে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ ওসমানুর রশীদ। তবে গত ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীরের নির্দেশে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে একমাত্র ডাক্তার মীনাক্ষী রায়কে ডেপুটেশনে বদলী করা হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। সেই আদেশ অনুযায়ী ডাঃ মীনাক্ষী রায় চট্টগ্রামে যোগদান করেছেন। এতে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে।
এদিকে জেলা সদর হাসপাতালে নীচতলায় আলট্রাসনোগ্রাফি রুমের সামনে অপেক্ষারত খুরুশকুলের হামিদা বেগম জানান, আমি বুধবার সকালে পেটব্যাথার জন্য ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার আমাকে আলট্রানসোগ্রাফি করার জন্য লিখে দিলে। বুধবার ১১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত দাড়িয়ে থেকে আমার সিরিয়াল পাইনি। আবার বৃহস্পতিবারে এসেছি। তাও ১ টা বাজতে চলেছে এখনো আমাকে ডাকেনি।
এখানে অপেক্ষারত আরো কয়েজন জন বলেন, একটা আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করাতে বাইরে ১ হাজার টাকা বেশি লাগে। আমরা গরীব মানুষ তাই কম খরচে সরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে এসেছি। তবে শুনেছি এখানে ডাক্তার নাই। তাই ভোগান্তিরও শেষ নাই। তবে অনেকে অভিযোগ করেন স্থানীয়দের জন্য অপেক্ষার শেষ না থাকলেও রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খোলা। এখানে রোহিঙ্গাদের জন্য এনজিওর কিছু লোক আছে তারা সব কিছু করে দেয়। আমরা দাড়িয়ে থাকি। অন্যদিকে এক্সরে বিভাগেও একই অবস্থা। এক্সেরে বিভাগের সামনে রোগির ভীড় লক্ষ্যনীয়া। সবারই অভিযোগ ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকলেও এক্সরে করাতে পারছিনা। আর এক্সরে করাতে পারলেও রিপোর্ট দিতে কয়েকদিন লাগে।
এদিকে আলট্রাসনোগ্রাফি রুমে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বর্তমানে শিক্ষানবীস দুই জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। তারা হলেন ডাঃ শামীম আরা ও ডাঃ শ্যামা চৌধুরী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, আর আলট্রাসনোগ্রাফির ৪ টি মেশিনের মধ্যে ৩ টিই নষ্ট। ১ টি মাত্র সচল মেশিন দিয়ে কাজ চলছে সেটি ও যে কোন মূহুর্তে বিকল হতে পারে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের আরো কয়েকজন সিনিয়র ডাক্তার বলেন, হাসপাতালের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিভাগ হচ্ছে রেডিওলজী এন্ড ইমেজিং বিভাগ। যেখানে দৈনিক কমপেক্ষ ৭০ টি আলট্রাসনোগ্রফি এবং ১০০ জনের কাছাকাছি এক্সরে হয়। সেখানে মাত্র ১ জন ডাক্তার ছিল তাকেও ডেপুটেশনে বদলী করা এবং তাকে ছাড় দেওয়া এটা মোটেও উচিত হয়নি। আর এখানে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের একজন সহকারি অধ্যাপক কর্মরত থাকলেও তিনি কলেজে ক্লাস করে ঠিকমত এখানে সময় দেওয়া এবং প্রায় ২০০ রোগি দেখা এবং রিপোর্ট তৈরি করা খুবই দূরুহ ব্যাপার। এছাড়া মাঝে মধ্যে তাকে আদালতের যেতে হয় অথবা সে অসুস্থ হতে পারে বা ছুটি দরকার হতে পারে। তখন রোগি কে দেখবে ? সেটা চিন্তা করা উচিত ছিল।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায় ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে ডাঃ মীনাক্ষী রায় বদলী হয়েছে, তবে আমাদের হাসপাতালের রেডিওলজী এন্ড ইমাজিং বিভাগে ডাক্তার সংকট রয়েছে। তাই আমাদের হাসপাতালে দ্রুত ডাক্তার নিয়োগের বিষয়ে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এদিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, একেবারে ডাক্তার নাই কথাটি ঠিকনা। সেখানে মেডিকেল কলেজের একজন ডাক্তার আছে। যেহেতু কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সব ডাক্তার হাসপাতালে সংযুক্ত তাই তিনি সেখানে কাজ করছেন। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই একজন নতুন রেডিওলজিস্ট ডাক্তার পাব। আর নতুন ডাক্তার পাওয়া মাত্র কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অনুবিভাগ) মোঃ হাবিবুর রহমান খান বলেন, একজন ডাক্তার থাকলে তাকে বদলী করা কোন ভাবেই উচিত হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
প্রকাশ:
২০২০-০১-১১ ১১:১৪:৪৫
আপডেট:২০২০-০১-১১ ১১:১৪:৪৫
- আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে গায়েবি মামলার আসামি এবি পার্টির নেতা
- শান্তি-শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন -চকরিয়ায় মাসুদ সাঈদী
- চকরিয়া শহর পরিস্কারের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের ১০১ দিবস উদযাপন
- চকরিয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাচার বন্ধে বনবিভাগের অভিযান, দুইটি ট্রাক জব্দ
- চকরিয়ায় প্যারাবন নিধনের মামলায় আসামি নিরীহ মানুষ
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে নারীসহ তিনজন গ্রেফতার
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদি সহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার, বিক্রেতা গ্রেফতার
- দুর্নীতির আখড়ায় কক্সবাজার সিটি কলেজ
- চকরিয়া সদরের বক্স রোড সম্প্রসারণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
- চকরিয়ার সাবেক এমপি জাফর আলম, সালাহউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের ৭৩৬ জন আসামী
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- উত্তপ্ত রামু সরকারি কলেজ: অধ্যক্ষ মুজিবের অপসারনের দাবিতে কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা
- কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- বাড়ি ফিরেছে কুতুবদিয়ার অপহৃত ১৯ জেলে
- শান্তি-শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন -চকরিয়ায় মাসুদ সাঈদী
- চকরিয়ায় মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের লেক থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার
- চকরিয়া আসছেন চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করিম
- চকরিয়ায় আওয়ামিললীগ ক্যাডার নজরুল সিণ্ডিকেটের দখলে ৩০ একর বনভুমি:
পাঠকের মতামত: